প্রত্যেক ব্যক্তির অধিকার হ্রাস পায়,যখন একজন ব্যক্তির অধিকার হুমকির সন্মুখিন হয় – রিও মানুষের জন্য কাজ করে।
অপু রানী উকিল
“আমরা রিও “এর যোদ্ধা।
আমাদের ধর্ম মানবতা!
আমরা উদ্যম নির্ভীক,নাহি ডরি ত্রাসে
এগিয়ে যাবোই আমরা অসহায় দের পাশে।”
2014 ইং রিও এর পথচলা শুরু শ্রদ্ধেয় চন্দন স্যার এর উদ্দীপনা যেটা কিনা আজ উন্মাদনায় রূপ নিয়েছে।কর্মউন্মাদনা,কিছু ভালো কাজ করার,আর সেই চিন্তাশক্তি অন্যের মাঝে ছড়িয়ে দেবার।যেমনটা যুগে যুগে করে গেছেন,আর করে চলেছেন বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক গণ।
2016 তে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃক এই সংস্থাটি, আর্তমানবতার সেবায় স্বেচ্ছায় কাজ করার অনুমোদন প্রাপ্ত হয়।
বর্ত্তমানে এর কর্মী সংখ্যা-প্রায়-700 এর ও ওপরে।বাংলাদেশ এর 42 টি জেলায় রয়েছে এর কর্মী বৃন্দ,যারা অমানবিক ও জীবনের ঝুঁকি নিয়েও মানুষের কাজ করে যাচ্ছে।মানুষ কে ন্যায় বিচার দেবার চেষ্টা করে যাচ্ছে।আমরা জানি”
“জাস্টিস ইজ ডিলেইড,জাস্টিস ইজ ডিনাইড”
রিও চায় মানুষ দেরীতে বিচার পেলেও অন্তত :তার একটা জায়গা থাকুক,যেখানে সে তার কষ্ট, তার দু:খ ভাগ করতে পারবে।সে বুক চাপড়ে,চিৎকার করে কাঁদতে পারবে।অত্যাচারী দের বা অন্যায়কারী দের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে কিংবা আত্মহননের পথ বেছে নেবেনা।
সম্প্রতি দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার বিরলী গ্রাম স্বাক্ষী হয়ে রইলো,এমন এক ঘটনার।যেখানে আমাদের রিও সৈনিক,অকুতোভয়, সংগ্রামী,অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী আমাদের গৌরব আর তথাকথিত অপশক্তির ত্রাস আমাদের শ্রদ্ধেয় দাদা,শ্রী উত্তম রায় বাবুর প্রচেষ্টা আর নিরলস পরিশ্রম সর্বোপরি সংগবদ্ধ সংগঠন এর সহযোগিতায় তিনি প্রমান করেছেন,কোন কিছুই অসম্ভব নয়।
আমি ব্যক্তিগতো ভাবেও বিশ্বাস করি,পৃথিবী তে ভালো মানুষের সংখ্যা এখনো অনেক বেশী।যাক মূল ঘটনায় ফিরে আসি।ধন্যরাম”উক্ত গ্রামের গরীব পারণা বালার মেধাবী সন্তান।নুন আনতে পান্তা ফুরানো ঘরের ছেলে।পারণ বালার বিচন ক্ষেত গরু দিয়ে খাওয়ালে,ছেলে নিয়ে উপোস থাকতে হবে যে,তাই গরু আটকে,মালিককে জানানো প্রয়োজন ভেবে গোরু আটকে রাখার মূল্য যে তাকে এভাবে দিতে হবে,সে কি স্বপ্নেও সেটা ভেবেছিলো?
মালিক শাহজাহান, খবর পেয়ে পারনাবালাকে টেনে হিঁচড়ে,চুল টেনে,বিবস্ত্রা করে তার শ্লীলতা হানীর চেষ্টা চালায়।মায়ের এই হাল দেখে অন্য দশ জন সন্তান এর মতো ধন্যরাম ও ছুটে আসে মাকে রক্ষা করতে।কিন্তু প্রতিপক্ষের সামনে টিকতে না পেড়ে পালিয়ে গিয়েও শেষ রক্ষা হয়না ধন্যরাম এর।
শাহজাহান বাহিনী ৫/৬ জন মিলে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায় ধন্যরাম কে।প্রহৃতা মা একদিকে নিজের অপমান কষ্ট অন্যদিকে সন্তান হারানোর ভয়,চিৎকারে,কাকুতিমিনতি তে আকাশ বাতাস ভারী করে তুলেও শেষ রক্ষা হয়না।
অবশেষে ছেলের লাশ মেলে,অনতিদূর এক আদিবাসী বিদ্যালয়ে,যেখানে খুব নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছে মেধাবী ধন্যরাম কে।ঘটনা এখানেই শেষ নয়,এই মৃত্যুকে অপমৃত্যু নামে চালাতে শুরু হয় অন্য কাহিনী, শাহজাহান এর আত্মীয় এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে,কাহারোল থানার এস,আই কে দিয়ে মন গড়া রিপোর্ট তৈরি করান।ময়না তদন্ত সহ সকল তদন্তের রিপোর্ট বানচাল করে উলটো প্রকাশ্যে হুমকী প্রদান করে যে,যে ধনশ্যাম এরর পক্ষে স্বাক্ষ্য দেবে তার অবস্থাও ধন্যরাম এর মতোই হবে।
উল্লেখ্য, এই শাহজাহান এর নামে পূর্বেও অন্যান্যদের মারামারির অভিযোগ রয়েছে।পারণা বালা দেবী বুকের কষ্ট বুকে চেপে পাথর হয়ে রইলেন।ভয়ে টু শব্দটিও করতে চাইলেন না।আমাদের রিও এর উত্তম রায়,বিভিন্ন সংগঠন এর প্রধান দের সহযোগিতায় মানববন্ধন কর্মসূচি সহ বিভিন্ন কর্মসূচি র মাধ্যমে জনগণ কে একতাবদ্ধ করতে সক্ষম হন।আর পারণা দেবী কে বুঝিয়ে রাজি করান,সাহস দেন,মানববন্ধনে সাথ দিতে।
ফলস্বরূপ হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা থানা ঘেরাও করে এবং অপরাধীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির স্বপক্ষে সোচ্চার হয়।উত্তম বাবু রিও এর দৃষ্টান্ত হয়ে রইলেন।স্বদিচ্ছা আর কর্মনিষ্ঠায় সবই সম্ভব।
রিও মানবতার সেবায় নিয়োজিত। একে একে, অল্প সময়ে রিও বেশ কিছু সংখ্যক অসহায়ের সমস্যা হাতে নিয়েছে কিছু সমাধান করেছে আর কিছুর কাজ চলছে।
আসুন রিও এর হাত কে শক্তিশালী করি।অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে উঠি।৫ বছর শেকল বন্দী ফাতিমা,জেসমিন,কিংবা,কুমারী নূপুর রানী,সুখিয়া দাস কিশোর গঞ্জ এর ফাহিমা,রিও এর হাত ধরে, উত্তম বাবু,বিজয় বাবু,নির্মলেন্দু বাবু,ইরা দত্ত ম্যাডামদের সহযোগিতায়, সবাই সুবিচার পাক।অত্যাচারীদের ভয়ে চুপকরে থাকা মানে প্রক্ষান্তরে,অত্যাচারকে সমর্থন করা।
লেখিকাঃ President, REO, WB.